হামিম কামাল
আমি হামিম কামাল। গত শতাব্দীর ৯ই আগস্ট ৮৭তে জন্ম কিংবা ঢাকার প্রান্তিক রূপনগরে তুরাগ নদের ধারে জাতীয় উদ্ভিদ উদানের বটগাছের খোড়লের ভেতর সাপলুডু খেলে বড় হয়েছি, এ জাতীয় তথ্য নিছক খড়কুটো, যখন বুঝে যাই, কিছুই পরিকল্পনায় ছিল না, কেবল অন্ধভাবে ঘটছে।
মানুষের সবচেয়ে বড় ট্র্যাজেডি বোধহয় এই যে, জগৎ সুচারু অন্ধ, তা বুঝলে কারো কারো চেতনার অন্ধত্ব উবে গিয়ে বেঁচে থাকাটা বেড়ালকাঁটা হয়ে যায়।
তবু 'ভালোবাসার সাধ জাগে' এমনই সে লজ্জাহীন। আমিও কি ব্যতিক্রম?
পরিজন আছে, বন্ধুরা আছে, তাই আমি আছি- শুনে দেকার্তের মতো লোকও বলবেন, 'তা মন্দ বলো নাই।' সুতরাং 'আমি ভাবছি, অতএব আছি নিশ্চয়ই' এর গোড়ায় জল ঢেলে গাছটিকে বড় করে ফুলপাতা ফুটিয়ে ঝরিয়ে যে উত্তর পেয়েছিলাম, তা দিয়ে গিয়েছি ক্রমশ, জঠর (২০১৬), কারখানার বাঁশি (২০১৮), সোনাইলের বনে (২০১৯), জাদুকরী ভ্রম। ২০২০), লিভার বাগানবিলাস (২০২১), এক সন্ধায় শ্যামশ্রী রায়। ২০২২), ত্রিস্তান (২০২০) এসব গ্রন্থে। সঙ্গে যুক্ত হলো দন্তইয়েভস্কির সঙ্গে দ্বিমত।২০২৫)।
যখন আমি থাকব না, অপর কেউ কি ভাববে আমাকে? তার ভাবনায় আমার যে 'থাকা'র জগৎ, সেখানকার যিনি দেকার্তে, না জানি কী তত্ত্ব তিনি দিচ্ছেন। এভাবে সারল্য যখন স্তরীভূত, জটিলের মৃত্তিকা তখন তৈরি হচ্ছে। মানুষ সরল জীবনের কথা বলে। বেশ। জটিল যে অগনিত সরলের পরস্পরভেদী অন্বয়, তা বোধহয় বলার সময় কারো মনে পড়ে না। জগৎ সরলে জটিল। মানুষ বুঝতে পারে বা না-পারে, জগৎ সরলে জটিল পথে তার চক্র পূর্ণ করে ঠিকই ভারসাম্য রক্ষা করবে। সেখানে অনুতাপ বা প্রার্থনার ভূমিকা কোথায়, সত্যিই আমার জানা নেই। তবে যে লোককে শুভকামনা জানাই? এ কি কেবলই অভ্যাস?
একটু এদিক ওদিক হলেই আজ হামিম কামালের বদলে অন্য কেউ এসে হয়ত ভিন্ন কথা শোনাত। এমন অন্ধপথে, দৈবে নির্মিত যে চরিত্র, তার বিশ্বাসে অবিশ্বাসে আস্থা রাখার জায়গা কোথায়, আমি সত্যিই জানি না। তবে যে আবার মানুষের পরিবর্তনে বিশ্বাস করি? এ কি কেবলই দ্বিচারিতা।
Share Now