'মিছিল' নামে একটি কবিতা কবি ২০১৮ সালে লিখেন, যেখানে গণ-অভিপ্রায়ের গণক্ষমতায় রূপ নেবার উত্তুঙ্গ লহমায় সমাজের বিভেদের পর্দা উঠে গিয়ে হক আকারে, মানে 'সত্য' আকারে, গণমানুষের এক হয়ে ওঠা, কলেমা হয়ে ওঠার মাহদীয় ঘটনা ধরা পড়ে। চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানের সাথে একাকার এই কবিতাটি আসলে এক অধরা গায়েবের নিশান। যা মিছিলের মাঝে সত্যের বর্তমান হয়ে ওঠার সাক্ষ্য দিচ্ছে (শহিদের এক অর্থ যে 'সাক্ষী' তা যেন আমরা না ভুলি)। এই অধরা হকের বর্তমান হয়ে ওঠার সাক্ষী-সাবুত খোদ মিছিলে হাজির থাকা দয়াল মাবুদ। যে দয়াল সবার আমির ভেতর অনামি হয়ে-বাতাসের মতো কী রুহের মতো ভাষারূপে-বিরাজ করে। স্বভাবতই মোহাম্মদ রোমেলের কাব্যভাষায় বাংলার ভাবসম্পদের পাটাতনে দাঁড়িয়ে বৈশ্বিক পুঁজি, সাম্রাজ্য কিংবা উপনিবেশকে মোকাবিলার একটা সজ্ঞান প্রয়াস ধরা পড়ে। পশ্চিমা মডার্ন হিউম্যানিস্ট লিবারেল ধ্যান-ধারণাকে বারবার প্রশ্নবিদ্ধ করার মধ্য দিয়ে একটা এন্টিকলোনিয়াল গণসাহিত্যচর্চার রূপের অন্বেষণ তার কবিতায় স্পষ্ট হয়ে ফুটেছে।
-উদয় হাসান
রূপান্তরশীল চিন্তার সামাজিক অভিব্যক্তির প্রক্রিয়া আকারে হেগেল যত সহজে 'প্রাণকর্তা' বা geist কথাটা ব্যবহার করেন-এই দয়াল যেভাবে চিন্তা আকারে কিংবা ভাষা আকারে সর্বত্র বিরাজমান-এই প্রক্রিয়াটা জটিল এবং তা খালি চোখে ধরাও পড়ে না। এই অধরা প্রক্রিয়ার পাথুরে প্রমাণ আকারে আমরা মোহাম্মদ রোমেলের কাব্যগ্রন্থ 'অধরা শহীদি মিছিল' পাঠ করতে পারি।
© জ্ঞানকোষ প্রকাশনী - সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।
Share Now