এক বৎসরেরও বেশি সময় আগে রাষ্ট্রপতি বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদ পড়াশোনার স্বার্থে সাময়িকভাবে হলেও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে ছাত্র রাজনীতি বন্ধ রাখার পক্ষে কথা বলেছিলেন। আমি আশা করেছিলাম দেশের মঙ্গলাকাঙ্ক্ষী বুদ্ধিজীবী, শিক্ষক এবং রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ রাষ্ট্রপতির বক্তব্যের সমর্থনে কিছু বক্তব্য রাখবেন। আমি সবিস্ময়ে আবিষ্কার করলাম বাস্তবে সেটি ঘটল না, বরং তার বক্তব্যের বিরোধিতা করে ছাত্র রাজনীতির প্রয়োজনীয়তার উপরে বিভিন্ন কাগজে লেখালেখি হল। আমি তখন প্রায় মরীয়া হয়ে রাষ্ট্রপতি বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদের বক্তব্যকে সমর্থন করে "আমাদের ছেলেমেয়েদের ফিরিয়ে দাও" নামে ভোরের কাগজে একটি লেখা লিখেছিলাম। খবরের কাগজের উপসম্পাদকীয় জাতীয় লেখাগুলি আদৌ কেউ পড়ে বলে আমার ধারণা ছিল না, কিন্তু আমি আশ্চর্য হয়ে আবিষ্কার করেছিলাম দেশের বুদ্ধিজীবী, শিক্ষক বা রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের প্রলিত বিশ্বাসের বিরোধী এই লেখাটি অসংখ্য মানুষ পড়েছিল। তাদের অনেকে চিঠি লিখে আমাকে ধন্যবাদ জানিয়েছিলেন, ছাত্র- ছাত্রী এবং অভিভাবকদের অনেকে আমার বক্তব্যের সমর্থনে পত্র-পত্রিকায় লেখালেখিও করেছেন। শুধু তাই নয়, দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক বড় বড় শিক্ষাবিদ গোপনে আমাকে এই লেখাটির জন্যে অভিনন্দিত করলেও প্রকাশ্যে এই স্পর্শকাতর বিষয়টি নিয়ে একটি কথাও বলতে রাজী হননি।
বুদ্ধিজীবীদের কেউ কেউ আমাকে সমস্যার গভীরে গিয়ে প্রকৃত দোষীদের চিহ্নিত না করার জন্যে মৃদুভাবে তিরস্কার করেছিলেন। তাদের তিরস্কারে খানিকটা সত্যতা ছিল বলে আমি পরবর্তীতে "আমি অভিশাপ দিই" নামে একটি লেখায় ছাত্র রাজনীতির বর্তমান ভয়ংকর রূপটির জন্যে সরাসরি রাজনৈতিক দলগুলিকে দোষী সাব্যস্ত করেছিলাম। কোন-একটি বিচিত্র কারণে এই লেখাটিও সাধারণ পাঠক অত্যন্ত আগ্রহের সঙ্গে গ্রহণ করেছিলেন।
© জ্ঞানকোষ প্রকাশনী - সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।
Share Now